West Bengal student credit card scheme: Eligibility, Loan &  Interest rate- সম্পূর্ণ গাইড

West Bengal student credit card scheme: Eligibility, Loan &  Interest rate

উচ্চশিক্ষা প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। কিন্তু অনেক সময় এই স্বপ্ন পূরণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক সীমাবদ্ধতা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে—West Bengal student credit card scheme (WBSCC)। এই স্কিমের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা খুব সহজ শর্তে উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণ পেতে পারে। B.Ed. কোর্সের মতো পেশাগত শিক্ষার জন্য এই স্কিম একটি বিশাল সহায়ক হতে পারে।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা West Bengal student credit card scheme কী, কারা এর জন্য আবেদন করতে পারবেন, কত টাকা পাওয়া যাবে এবং B.Ed. শিক্ষার্থীদের জন্য এটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ—এই সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের দেওয়া এই গাইডলাইন আপনাকে সঠিক উপায়ে আবেদন করতে এবং আপনার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করবে।

West Bengal student credit card scheme কী?

West Bengal student credit card scheme হলো রাজ্য সরকারের একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা শিক্ষার্থীদের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে। এই ঋণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি collateral-free অর্থাৎ কোনো গ্যারান্টি বা বন্ধক ছাড়াই এই ঋণ পাওয়া যায়। এই স্কিমের মূল লক্ষ্য হলো আর্থিক অভাবের কারণে যেন কোনো শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ না হয়, সেটিকে নিশ্চিত করা।

আরো পড়ুনঃ B.Ed. স্কলারশিপ পশ্চিমবঙ্গ: SVMCM, OASIS, ঐক্যশ্রী ও আবেদন পদ্ধতি

কারা আবেদন করতে পারবে? (Eligibility)

এই স্কিমের জন্য আবেদন করার কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা আছে:

  • বাসস্থান: আবেদনকারী বা তার পরিবারকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ১০ বছর ধরে বসবাসকারী হতে হবে।

  • বয়সসীমা: আবেদন করার সময় শিক্ষার্থীর বয়স ৪০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না।

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কোর্সে ভর্তি থাকতে হবে। এর মধ্যে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পেশাগত ডিগ্রি (যেমন B.Ed.), ডিপ্লোমা, ডক্টরাল কোর্স এবং এমনকি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিংও অন্তর্ভুক্ত।

কতটা টাকা পাওয়া যাবে এবং কী কী খরচ কভার করে?

West Bengal student credit card scheme-এর অধীনে একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ₹10,00,000 (দশ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত ঋণ পেতে পারে। এই ঋণের মাধ্যমে নিম্নলিখিত খরচগুলো কভার করা যায়:

  • প্রাতিষ্ঠানিক খরচ: কোর্স ফি, পরীক্ষার ফি, লাইব্রেরি ফি, ল্যাব ফি ইত্যাদি।

  • অনইনস্টিটিউশনাল খরচ: বই, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হোস্টেলের খরচ, বাসস্থানের ভাড়া, এবং এমনকি জীবনযাপনের খরচও এর অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত, ঋণের ৭০% প্রাতিষ্ঠানিক এবং ৩০% অনইনস্টিটিউশনাল খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই ৩০% এর মধ্যে প্রায় ২০% পর্যন্ত জীবনযাপনের খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গের সরকারি B.Ed. কলেজ: তালিকা, খরচ ও ভর্তি প্রক্রিয়া

সুদ এবং পরিশোধের শর্তাবলিঃ

এই স্কিমের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর নামমাত্র সুদের হার এবং নমনীয় পরিশোধের শর্ত।

  • সুদের হার: কার্যকরী সুদের হার মাত্র % প্রতি বছর (সাধারণ সুদ)। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সুদের ওপর ভর্তুকি প্রদান করে, যাতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কম থাকে।

  • সুদের রিবেট: যদি আপনি পড়াশোনা চলাকালীন সম্পূর্ণ সুদ পরিশোধ করে দেন, তাহলে % অতিরিক্ত রিবেট পাওয়া যাবে, যা আপনার মোট খরচকে আরও কমিয়ে দেবে।

  • পরিশোধের সময়সীমা: ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ বছর সময় পাওয়া যায়। এই সময়ের মধ্যে আপনার কোর্স শেষ হওয়ার পর এক বছরের জন্য একটি মোরাটোরিয়াম বা পরিশোধ স্থগিত থাকার সুযোগ থাকে। অর্থাৎ, কোর্স শেষ করে চাকরি পাওয়ার পর এক বছর পর থেকে কিস্তি পরিশোধ শুরু করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গে বেসরকারি কলেজে B.Ed. কোর্স ফি: সম্পূর্ণ গাইড ও খরচ

আবেদন প্রক্রিয়াঃ 

আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অনলাইন এবং কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করা হয়:

  1. রেজিস্ট্রেশন: প্রথমে আপনাকে অফিসিয়াল পোর্টাল wbscc.wb.gov.in এ গিয়ে নিজের নাম, মোবাইল নম্বর এবং ইমেল আইডি ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

  2. ফর্ম পূরণ: রেজিস্ট্রেশনের পর প্রাপ্ত ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আবেদন ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করুন।

  3. ডকুমেন্ট আপলোড: প্রয়োজনীয় সমস্ত নথিপত্র (যেমন, পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণ, ভর্তির প্রমাণপত্র, ছবি, ব্যাংক বিবরণ ইত্যাদি) স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।

  4. যাচাইকরণ: আপনার আবেদনটি প্রথমে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাচাই করবে। এরপর উচ্চ শিক্ষা দপ্তর এটি যাচাই করে ব্যাংকে পাঠাবে।

  5. ব্যাংকিং ও ডিসবার্সমেন্ট: ব্যাংক আপনার আবেদনটি যাচাই করার পর ঋণের অনুমোদন দেবে। প্রাতিষ্ঠানিক খরচ সরাসরি আপনার কলেজের অ্যাকাউন্টে এবং অন্যান্য খরচ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।

আরো পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গ B.Ed. ভর্তি ২০২৫: যোগ্যতা, আবেদন প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য – সম্পূর্ণ গাইড

B.Ed. শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ টিপসঃ

B.Ed. কোর্সের শিক্ষার্থীরা এই স্কিমের মাধ্যমে বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারে।

  1. পূর্ণ খরচ কভার: দুই বছরের B.Ed. প্রোগ্রামের সম্পূর্ণ খরচ, যেমন কোর্স ফি, বই, ল্যাপটপ এবং হোস্টেলের খরচ এই স্কিমের আওতায় আসে।

  2. আগাম প্রস্তুতি: আবেদন করার আগে আপনার কলেজ অ্যাডমিশন লেটার, রেশন কার্ড/আবাসন প্রমাণ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখুন।

  3. সুদের সুবিধা: পড়াশোনা চলাকালীন যদি আপনি কিস্তিতে সুদ পরিশোধ করতে পারেন, তবে আপনি ১% রিবেট পাবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (সাধারণত)

  1. আধার কার্ড বা অন্য কোনো ফটো আইডি

  2. জন্মতারিখের প্রমাণপত্র

  3. ঠিকানার প্রমাণ (আবাসন সার্টিফিকেট, রেশন কার্ড, ভোটার আইডি)

  4. ভর্তির প্রমাণপত্র (অ্যাডমিশন লেটার, ফিরসিদ)

  5. পাসপোর্ট সাইজ ছবি

  6. আবেদনকারী এবং সহআবেদনকারীর (সাধারণত অভিভাবক) ব্যাংকের বিবরণ। (সর্বশেষ ও সম্পূর্ণ তালিকার জন্য অফিসিয়াল পোর্টাল দেখুন)

আরো পড়ুনঃ B.Ed কী? কেন করবেন বিএড কোর্স – পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্তারিত গাইড

উপসংহারঃ

West Bengal student credit card scheme শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শক্তিশালী এবং কার্যকরী উদ্যোগ। বিশেষ করে B.Ed. এর মতো পেশাগত কোর্সে যারা পড়াশোনা করে শিক্ষকতা পেশায় যেতে চান, তাদের জন্য এটি একটি বড় আর্থিক সাহায্য হতে পারে। আবেদন করার আগে অফিসিয়াল নির্দেশিকা এবং আপনার কলেজ বা ব্যাংকের নোডাল অফিসারের সাথে সমস্ত কাগজপত্র মিলিয়ে নিন। এরপর নিশ্চিন্তে আবেদন করুন এবং আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনের পথে এগিয়ে যান।

তথ্যসূত্র (References):

  1. Official Portal: https://wbscc.wb.gov.in
  2. Higher Education Department, Government of West Bengal: https://wbhed.gov.in
  3. MyScheme.gov.in (Government of India Portal): https://www.myscheme.gov.in/schemes/wbsccs
  4. West Bengal Co-operative Bank: https://www.wbscb.com/students-credit-card-scheme
  5. State Bank of India (Educational Loan Section): https://sbi.co.in/web/personal-banking/loans/education-loans/student-loan

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs):

1. West Bengal student credit card scheme-এর অধীনে কত টাকা ঋণ পাওয়া যায়?

Ans: সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়।

2. B.Ed. কোর্সের জন্য কি এই স্কিম প্রযোজ্য?

Ans: হ্যাঁ, B.Ed. সহ সকল পেশাগত কোর্সের শিক্ষার্থীরা এই স্কিমের জন্য আবেদন করতে পারে।

3. ঋণের সুদের হার কত?

Ans: এই ঋণের সুদের হার ৪% (সাধারণ সুদ), যা খুবই কম। যদি আপনি পড়াশোনার সময়কালে পুরো সুদ পরিশোধ করেন, তাহলে ১% অতিরিক্ত ছাড় পাওয়া যায়।

4. ঋণ পরিশোধের জন্য কত সময় পাওয়া যায়?

Ans: সর্বোচ্চ ১৫ বছর সময় পাওয়া যায়, যার মধ্যে কোর্স শেষ হওয়ার পর এক বছরের মোরাটোরিয়াম বা ছাড় থাকে।

5. B.Ed. পড়ার জন্য কি হোস্টেল এবং ল্যাপটপের খরচও এই ঋণে অন্তর্ভুক্ত?

Ans: হ্যাঁ, টিউশন ফির পাশাপাশি বই, ল্যাপটপ, হোস্টেল বা অন্যান্য বাসস্থানের খরচও এই ঋণের আওতায় আসে।

6. আবেদন করার জন্য কি কোনো গ্যারান্টি দিতে হয়?

Ans: না, এই ঋণটি সম্পূর্ণভাবে গ্যারান্টিমুক্ত (collateral-free)

7. আবেদন প্রক্রিয়া কি অনলাইনে করা যায়?

Ans: হ্যাঁ, সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়াটি wbscc.wb.gov.in পোর্টালে অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়।

আরো প্রশ্ন ও উত্তর জানতে সরকার প্রকাশিত PDF টি Download করুন। 

DAS Coaching Logo

Join Our Community

Stay connected with DAS Coaching on your favorite platform:

📱 Join WhatsApp Group

👍 Like Facebook Page

📢 Join Telegram Channel

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top

Discover more from DAS Coaching

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading